মার্কিন আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক ড্রোনের খুটিনাটি


ক্রমাগত ড্রোন প্রযুক্তিতে উন্নতি ঘটছে। বিভিন্ন দেশ এই প্রযুক্তি ব্যবহার করছে বিভিন্ন কাজে। রাষ্ট্রগুলি সীমান্তে এই বিজ্ঞান কাজে লাগাচ্ছে। ক্রমাগত উন্নতিতে আজ কোন কোন ড্রোন  ফাইটার বিমানের থেকেও শক্তিশালী। মার্কিন আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক বিশ্বের অন্যতম আধুনিক এবং শক্তিশালী ড্রোন।

তাই আজকে জেনে নেব মার্কিন আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক ড্রোনের খুটিনাটি

👉 এই UAV টির প্রতি ইউনিটের দাম প্রায় ২২৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার! (প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা!) আমেরিকা অল্প কিছু বানিয়েছে এই ব্যয়বহুল ড্রোনটি। এই একটি ড্রোনের টাকা দিয়ে প্রায় ১৬টি F-16 জেট ফাইটার কেনা যাবে। এই ড্রোনটির দাম প্রায় তিনটি F-35 সুপার জেটের সমান, যা আমেরিকার বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ব্যায়বহুল ও সর্বাধুনিক জেট ফাইটার! গ্লোবাল হক ড্রোনের প্রোগ্রাম খরচ ১০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, যা এই ড্রোনকে পরিণত করেছে আমেরিকার সবচেয়ে ব্যয়বহুল ড্রোনে।

👉 এটা আমেরিকার সবচেয়ে বড় আকারের UAV (Unmanned Aerial Vehicle)। সাইজ একটা বড়সড় জঙ্গী বিমানের সমান। এটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যে একটি অত্যাধুনিক জঙ্গী বিমান দিয়ে যা যা করা যায়, এই সুপার ড্রোনটি দিয়েও তাই তাই করা যায়, শুধু এটি চালাতে কোন পাইলট লাগেনা, তাই এটিকে ড্রোন বলা হচ্ছে। 


👉 এটা একটি সুপার হাইটেক ড্রোন এবং আমেরিকার সবচেয়ে আল্ট্রা হাই এলটিটিউট লং এন্ডুরেন্স ড্রোন। আমেরিকার সবচেয়ে আধুনিক, ব্যয়বহুল এবং বড় আকারের ড্রোন এটি।

👉 এটি Synthetic Aperture Radar এবং Long Range Electro - Optical বা Infrared Sensor এর মত জটিল ও ব্যয়বহুল টেকনোলজি ব্যবহার করে। এটিকে স্টিল্থ ড্রোন বলেও দাবী করা হয়।


👉 এর দৈর্ঘ ৪৭.৬ ফিট, উইংস্প্যান প্রস্থ ১৩০.৯ ফিট, উচ্চতা ১৫.৩ ফিট। 

👉 এর ওজন ১৪,৬২৮ কেজি। এর পেলোডও অনেক বেশি। 

👉 এই চালকহীন বিমান ১৩৬০ কেজি ওজন বহন করতে পারে।

👉 ১,১০,০০০ ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে। আমেরিকার আর কোন ড্রোন এত উচ্চতায় উড়তে পারে না। এত উচ্চতায় সাধারণমানের কোন আকাশ প্রতিরক্ষা মিসাইলও পৌছাতে পারে না। 

👉 এটি প্রতি ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৬২৯ কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে। 

👉 এত উচ্চতায় থেকেও চালকহীন এই বিমান দিনে ৪০ হাজার বর্গ মাইল বা এক লক্ষ বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ডের ওপর গোয়েন্দা তৎপরতা চালাতে পারে। অর্থাৎ দক্ষিণ কোরিয়া বা আয়ারল্যান্ডের মতো দেশের ওপর পুরোপুরি গোয়েন্দা তৎপরতা একটি মাত্র দিনেই সম্পন্ন করতে পারবে খুব সহজেই। 

👉 টানা ৩২ ঘণ্টার বেশি ঊর্ধ্বাকাশে থাকার সক্ষমতা রয়েছে আরকিউ-৪ গ্লোবাল হকের।

👉 যে কোনও ধরণের আবহাওয়ায় এটি তৎপরতা চালাতে পারে। 

👉 যেকোন ধরনের ভৌগলিক স্থানেও এটি তৎপরতা চালাতে সক্ষম। 

👉 লকহিড মার্টিনের তৈরি ইউ-২ ড্রাগন লেডি গোয়েন্দা জেট বিমান দিয়ে যে সব তৎপরতা চালানো যায় তার সবই আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক UAV দিয়েও চালানো যায়।

👉 
২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এটি পরিচালনার ব্যয় ৫০ শতাংশের বেশি হ্রাস পেয়েছে।  ২০১০ সালে এটি প্রতিঘণ্টায় ওড়ার ক্ষেত্রে ১৮৯০০ ডলার সমপরিমাণ অর্থ ব্যয় হত। কিন্তু ২০১৩ সালে তা ঘণ্টা প্রতি ১১ হাজার ডলারে নেমে আসে। 

👉 বিশ্ব বিখ্যাত মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান Northrop Grumman হচ্ছে এই ড্রোনটির নির্মাতা এবং আমেরিকান এয়ার ফোর্স, নাসা, ন্যাটো, জাপানিজ এয়ারফোর্স এবং সাউথ কোরিয়ান এয়ারফোর্স হচ্ছে এই ড্রোনটির ব্যবহারকারী।

Share To:

Naim Khan

Post A Comment: