Designated marksman রাইফেল ও প্রথাগত স্নাইপার রাইফেলের মধ্যে পার্থক্য কি?

Designated Marksman Rifle হিসেবে আমার কাছে M110 CSASS টা কেন যেন খুব ভালো লাগে। CSASS মানে Compact Semi Automatic Sniper System এটাই এর ডাকনাম। এটি প্রথাগত স্নাইপার রাইফেল নয় বরং এটি একটি DMR বা Designated marksman rifle। এগুলোকে এসল্ট রাইফেল এবং স্নাইপার রাইফেলের মাঝামাঝি ভার্শন বললেই ভালো।

মার্কসম্যান বা শার্পশুটারের সাথে একজন ট্রেইন্ড স্নাইপারের সামান্য পার্থক্য রয়েছে। একটি এসল্ট রাইফেলের ইফেক্টিভ রেঞ্জ ৪০০-৫০০ মিটার পাবেন কিন্তু সেটা যুদ্ধক্ষেত্রে সবসময় ব্যবহার হবেনা।৫০০ মিটার বা আধা কিলোমিটার কিন্তু যথেষ্ট ভালো রকমের দূরত্ব। বর্তমান যুগের মানুষের জন্য উন্নত অপটিক্যাল সাইট ছাড়া এত দূরে ইফেক্টিভ কিলশট নেয়া বেশ কষ্টকর। এমনকি সাইট থাকলেও রাইফেলের ম্যাক্সিমাম রেঞ্জের ব্যবহার খুব কম হয়।

আবার ডেডিকেটেড স্নাইপার রাইফেল বা স্নাইপারম্যান যে সবসময় আপনার টিম/স্কোয়াডে থাকবে এমনটা কিন্তু নয়। এক্ষেত্রে ইনফেন্ট্রি স্কোয়াডে থাকা সবচেয়ে সেরা শার্প শুটার তথা Designated marksman(DM) কে টিমের ব্যবহৃত রেগুলার বুলেট ফায়ারে সক্ষম স্পেশাল রাইফেল দিতে হবে যা দিয়ে ৩০০ থেকে ৬০০ মিটার অনায়াসে নিখুঁত কিলশট নেয়া সম্ভব।
এজন্য এসব রাইফেলকে Designated marksman rifle বা DMR বলে। এজন্য এসব রাইফেলের ম্যাক্সিমাম রেঞ্জ ৮০০-১০০০ মিটার হয়। ম্যাগাজিন সাইজ ১০,২০,৩০ রাউন্ডের হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টিমের বাকি সবাই যে বুলেট ব্যবহার করে, DM ও একই বুলেট ব্যবহার। ফলে আলাদা স্পেশালাইজড স্নাইপার বুলেট বা রাইফেল নিতে হয় না। আবার টেলিস্কোপিক সাইটের পাশাপাশি প্রয়োজনে লেজার এইমিং ডিভাইস বা হলোগ্রাফিক/রেড ডট সাইটের হাইব্রিড কম্বিনেশন সাজিয়ে শর্টরেঞ্জ কমব্যাটের উপযোগী করা যায়। সমস্যা একটাই এটি সেমি-অটোমেটিক বিধায় এতে ৩/৪ রাউন্ডের ব্রাস্টশট তথা ফুল অটোমেটিক মুডে গুলি ছোড়া যায় না (তবে এটা তেমন কোনো সমস্যা নয়)

➡মোটকথা সকল ডেডিকেটেড স্নাইপার রাইফেলই DMR, কিন্তু সকল DMR ডেডিকেটেড স্নাইপার রাইফেল নয়। স্নাইপিং মিশনের ধরণ, টার্গেটের দূরত্ব, টার্গেট এলাকার পরিবেশ ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে স্নাইপার রাইফেল ও বুলেট নির্বাচন করা হয়।
গ্রাউন্ড টিমের যদি স্বল্প রেঞ্জ যেমন ৬০০-৮০০ মিটারে ফাস্ট স্নাইপিং সাপোর্ট (শত্রুর সংখ্যা খুবই বেশি) দরকার হয় তাহলে DMR সবচেয়ে আদর্শ অস্ত্র। যদি তুলনামূলক লংরেঞ্জ স্নাইপার ফায়ার সাপোর্ট দরকার হয় তাহলে তো স্পেশাল স্নাইপার রাইফেল (যেমন বোল্ট একশন) ও স্পেশাল বুলেট (যেমন .৩৩৮ ম্যাগনাম বা .৫০ বিএমজি) ব্যবহার হয়।

মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি। এম-১১০ 7.62×51mm ন্যাটো বুলেট ফায়ার করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের Knight's Armament Company, তাদের SR-25 DMR রাইফেলটির উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত বলতে হচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশের স্পেশাল ফোর্স সোয়াট SR-25 ব্যবহার করে। SR-25 মূলত AR-10 এবং AR-15 এর উপর ভিত্তি করে বানানো হয়েছে। AR-15 হচ্ছে বিখ্যাত M16 এসল্ট রাইফেলের  ফিচার সমৃদ্ধ।
(AR15 সেমি অটোমেটিক রাইফেল এবং এটি মার্কিন সিভিলিয়ানদের কাছে জনপ্রিয় অস্ত্র)

👉 এম-১১০ এর তুলনামূলক হালকা A1 ভার্শন দিয়ে আগেরগুলোকে রিপ্লেস করা হবে। M110A1 বানানো হয়েছে G28 স্নাইপার রাইফেলের উপর ভিত্তি করে। এটি মূলত হেকলার এন্ড কচ HK417 এর মামাতো ভাই।
👉 10x টেলিস্কোপিক সাইট, বাইপড ও লোডেড ২০ রাউন্ডের(!) ম্যাগাজিনসহ এর ওজন ৬.৯৪ কেজি।
👉 ২০০৮ থেকে এখনও সার্ভিস দেয়া এই রাইফেলটি আফগান, ইরাক যুদ্ধসহ সিরিয়ায় সাম্প্রতিক তুর্কি-কুর্দি যুদ্ধেও ব্যবহার হয়েছে।
👉 ইউএস আর্মি-মেরিন ছাড়াও তুরস্ক, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, পোল্যান্ড, মেক্সিকো, ইরাক, আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া, গ্রিস, হাঙ্গেরি, কানাডা, ব্রাজিল, আর্মেনিয়া, স্পেন এটি ব্যবহার করে।
👉 এটির রেঞ্জ ৮০০ মিটার।
অনেকের কাছে এই রেঞ্জ কম মনে হবে।এর কারন এটি একটি DMR, ডেডিকেটেড স্নাইপার রাইফেল নয়। সে হিসেবে রেঞ্জ ঠিকই আছে।৬০০-৮০০ মিটারের বেশি দূরে ইফেক্টিভ শট নেয়ার জন্য স্পেশাল ট্রেইনিং লাগে।আর ব্যাটলফিল্ডে একজন শার্পশুটারের হাতে DMR থাকা মানে শত্রুর জন্য আতঙ্ক!
Share To:

K. Nayeem

Post A Comment: