যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে স্বাভাবিক ভাবেই যুদ্ধের কৌশলেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। যেমন প্রাচীনকালে যুদ্ধে জয় নির্ভর করত কার কত লোকবল আছে তার উপর কিন্তু আধুনিক যুগে এই ধারণা পুরোপুরি অচল না হলেও মোটামুটি অকার্যকরই বলা যায়। কারণ এখন প্রায় প্রতিটি সামরিক বাহিনীতেই কিছু কিছু বিশেষ বাহিনী থাকে যাদের ছোট্ট একটি ঝটিকা অপারেশনই একটি যুদ্ধের মোড় খুব সহজেই ঘুড়িয়ে দিতে পারে। তবে এইসব বাহিনীর ঝটিকা অপারেশনের জন্য প্রথমত এদের শত্রু এলাকায় পৌঁছানোটা জরুরী কিন্তু বেশিরভাগ সময় এই কাজটিই যেকোন অপারেশনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্যাটিকে মোকাবিলা করার জন্য অনেকগুলো মাধ্যম থাকলেও অধিক দুরত্বে নিঃশব্দে কোন দলকে পৌঁছে দেয়ার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম নিঃসন্দেহে সাবমেরিন।
আমাদের মাঝে অনেকেরই ধারণা সাবমেরিনে করে যখন স্পেশাল ফোর্সের সৈন্যদের কোথাও পৌঁছে দেয়া হয় তখন তাদের সাবমেরিনের ভেতরে রাখা হয়। ক্ষেত্র বিশেষে কথাটি সত্যি হলেও সবসময় কিন্তু সৈন্যদের সাবমেরিনের ভেতরে বহন করা হয় না। কারণ সাবমেরিনের ভেতরে বহন করলে তাদের ভূমিতে নামানোর জন্য সাবমেরিনকে পানির উপরিতলে উঠতে হয় কিন্তু শত্রু এলাকায় কোন সাবমেরিনকে পানির উপরিতলে উঠানো একটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এবং এরফলে সাবমেরিনকে সহজেই সনাক্ত করে ধ্বংস করা সম্ভব। তাই সাবমেরিনে করে স্পেশাল ফোর্সকে কোন স্থানে মোতায়েনের সময় তাদের সাবমেরিনের শরীরের সাথে লাগানো একটি কম্পার্টমেন্টে বহন করা হয় ফলে সাবমেরিন পানির নিচে থাকা অবস্থায়ই এই কম্পার্টমেন্ট থেকে সৈন্যরা ভূমিতে অবতরণ করতে পারে।
![]() | |
|

এই কম্পার্টমেন্টগুলো ড্রাই ডেক শেল্টার নামে পরিচিত এবং এই সব কম্পার্টমেন্টে সাধারণ সাবমেরিনের মতোই বিদ্যুৎ, খাবার পানি, অক্সিজেনের সরবরাহ সহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা থাকে। তবে এই কম্পার্টমেন্টগুলো সবধরণের সাবমেরিনে লাগানো সম্ভব হয় না কারণ এগুলোতে বিভিন্ন জিনিস সরবরাহ করার জন্য আলাদা লাইনের প্রয়োজন হয় যা সব সাবমেরিনে থাকে না।
বর্তমানে শুধু রয়্যাল নেভি ও ইউএস নেভির কিছু নিউক্লিয়ার পাওয়ারড সাবমেরিনে এদের ব্যবহার করা সম্ভব। এই দুই নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত ড্রাই ডেক শেল্টারগুলো মোটামুটি একই ধরণের এবং এরা প্রায় ২০ জন সৈন্যকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সহ বহন করতে পারে। এইসব শেল্টারগুলো যেহেতু নিউক্লিয়ার সাবমেরিনে লাগানো থাকে তাই এতে করে পৃথিবীর যেকোন স্থানে সৈন্যদের পৌঁছে দেয়া সম্ভব.....






Post A Comment: