ইসরায়েল বলছে, সিরিয়ার ভেতরে সম্প্রতি দুটি আক্রমণে তারা পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক এবং ব্যয়বহুল এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধ বিমান ব্যবহার করেছে।
এ বিমান যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি। প্রতিটি বিমানের দাম প্রায় ১০ কোটি ডলার।
এই প্রথম এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কোন 'কমব্যাট অপারেশনে' ব্যবহৃত হলো।
এ বিমান এতই ব্যয়বহুল যে খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এর দাম এবং কার্যকারিতা নিয়ে সমালোচনা হয়েছে, এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পও এর সমালোচনা করে টুইট করেছিলেন।
ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল আমিকাম নরকিন আজ এ বিমান ব্যবহারের খবর প্রকাশ করার পর এই বিমান নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
কি বৈশিষ্ট্য এই এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমানের?
লকহিড মার্টিন কোম্পানির তৈরি এই বিমানে আছে 'স্টেলথ' প্রযুক্তি। অর্থাৎ এ বিমান ওড়ার সময় শত্রুপক্ষের রাডারে তার অস্তিত্ব ধরা পড়বে না। তা ছাড়া শত্রুপক্ষের বিমানের চোখে পড়ার আগেই সে নিজেই তাকে দেখতে পাবে।
বিমানটির পাইলটের হেলমেটে বসানো আছে একটি ডিসপ্লে সিস্টেম - যাতে অন্যদিকে মুখ করে থাকা অবস্থায়ও শত্রু বিমানের দিকে গুলি করতে পারবে।
পাইলট শত্রু লক্ষ্যবস্তুর গতিবিধি চিহ্নিত করতে পারবেন, শত্রু রাডার 'জ্যাম' বা অকার্যকর করে দিতে পারবেন এবং আক্রমণ প্রতিহত করতে পারবেন।
তা ছাড়া এ বিমানের যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত অপারেশন কমান্ডারের সাথে শেয়ার করা যাবে।
অবশ্য এ বিমানের সমালোচনাও হয়েছে। সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এফ-৩৫ যুদ্ধিবিমানে শত্রু রাডার ফাঁকি দেবার ব্যাপারটিকে এত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যে, অন্য নানা দিক থেকে এতে অনেক খামতি রয়ে গেছে।
কিন্তু জেনারেল নরকিন বলছেন, এ বিমান একটি 'গেম চেঞ্জার' অর্থাৎ এটি আসার পর বিমানযুদ্ধ আর আগের মত থাকবে না।
তিনি বলেন, "আমরা এ বিমান সারা মধ্যপ্রাচ্যের ওপরে উড়িয়েছি এবং দুটি লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমণও চালিয়েছে।" তবে কি লক্ষ্যবস্তু তা তিনি উল্লেখ করেন নি।
কেন ইসরায়েল এভাবে এফ-৩৫ ব্যবহারের কথা জানান দিলো?
প্রশ্ন উঠেছে, কেন ইসরায়েল এই বিমান ব্যবহার করার কথা দাবি করলো?
বিবিসির সংবাদদাতা টম বেটম্যান জেরুসালেম থেকে জানাচ্ছেন, সম্ভবত ইসরায়েল তার সামরিক শক্তি দেখানোর জন্যই আমেরিকানদেরও আগে এ বিমান ব্যবহারের কথা ঘোষণা করেছে।
কারণ তারা মনে করে, ইরানের সুপ্রশিক্ষিত বাহিনী সিরিয়ায় গেড়ে বসছে, এবং ইসরায়েলের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করছে।
ইসরায়েল বলছে, সিরিয়ার ভেতরে তাদের সাম্প্রতিক বিমান হামলাগুলোতে ইরানের সামরিক স্থাপনাগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর ৪০০ কোটি ডলারের সামরিক সাহায্য দেয় ইসরায়েলকে।
মার্কিন আইন অনুযায়ী এ সাহায্য এমনভাবে দিতে হবে যাতে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব সবসময়ই অক্ষুণ্ণ থাকে।
Post A Comment: