হাল ধ্রুভ (HAL Dhruv) হেলিকপ্টার হচ্ছে হিন্দুস্তান এরোনটিকস্ লিমিটেডের তৈরী একটি মাল্টিরোল হেলিকপ্টার। এই হেলিকপ্টারটি মূলত জার্মান এরোস্পেস ম্যানুফেকচারার কোম্পানি MBB এর সহযোগিতায় ডিজাইন ও প্রোগ্রাম করা হয়।
হেলিকপ্টারটির প্রতি ইউনিটের মূল্য ৫.৯ মিলিয়ন ডলার বা ৪০ কোটি রুপি।
হাল দ্রুভ হেলিকপ্টারটির ডেভেলপমেন্ট ১৯৮৪ এর দিকে ঘোষনা করলেও ১৮ বছর পর এটি সার্ভিসে আসে।
হেলিকপ্টরটিতে রয়েছে Shakti (শক্তি) ইঞ্জিন।
হাল ধ্রুভের ট্রান্সপোর্ট ভার্সনের পাশাপাশি আরেকটি এটাকিং ক্যাপাবল ভার্সন আছে। যেটি হাল রুদ্র নামে পরিচিত।
👉 চালকঃ ১ জন অথবা দুজন পাইলট
👉 ধারণক্ষমতাঃ ৪-১২ জন যাত্রী
👉 দৈর্ঘ্যঃ ১৫.৮৭ মিটার (৫২ ফুট ৮ ইঞ্চি)
👉 প্রস্থঃ ১৩.২০ মিটার(৪৩ ফুট ৩ ইঞ্চি)
👉 উচ্চতাঃ ৪.০৫ মিটার (১২ ফুট ৪ ইঞ্চি)
👉 রটার ব্যাসঃ ১৩.২০ মিটার (৪৩ ফুট ৩.৭ ইঞ্চি)
👉 ডিস্ক এরিয়াঃ ১৩৭ বর্গমিটার (১৪৭২ বর্গফুট)
👉 খালি অবস্থায় ওজনঃ ২৫০২ কেজি
👉 টেক-অফের সময় সর্বোচ্চ ওজনঃ ৫৫০০ কেজি
👉 ইঞ্জিন: Twin 900 kW (1,200 shp) শক্তি টার্বোশ্যাফটস্
👉 সর্বোচ্চ গতিঃ ২৯০ কিঃমিঃ প্রতি ঘন্টায়
👉 সর্বোচ্চ গতিঃ ২৯০ কিঃমিঃ প্রতি ঘন্টায়
👉 ম্যাক্সিমাম রেঞ্জঃ ৮২৭ কিঃমিঃ (৫১৬ মাইল/৪১৭ নটিক্যাল মাইল)
👉 ক্লাইম্ব রেটঃ ৮.৯ মিটার প্রতি সেকেন্ডে (১৭৭১ ফুট প্রতি মিনিটে)
আর্মামেন্ট বা অস্ত্রসস্ত্রঃ
👉 ৮ টি এন্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইল
আর্মামেন্ট বা অস্ত্রসস্ত্রঃ
👉 ৮ টি এন্টি ট্যাংক গাইডেড মিসাইল
👉 ৪ টি এয়ার টু এয়ার মিসাইল
👉 ৪×৬৮ অথবা ৪×৭০ মিঃমিঃ রকেট পড (বিমানবাহিনী ও আর্মি ভ্যারিয়্যান্টস)
👉 ২টি টর্পেডো
👉 ডেপথ্ চার্জস্ অথবা এন্টি-শিপ মিসাইল
দুর্ঘটনা
এই হেলিকপ্টারটি কে Widow Maker বলা হয়। হেলিকপ্টারটি এপর্যন্ত অনেকগুলো দুর্ঘটনার স্বীকার হয়। চলুন সেই দুর্ঘটনাগুলো সম্পর্কে একটু জেনে নিইঃ
👉 নভেম্বর ২০০৫ এ হেলিকপ্টারের টেইল এর রোটর ব্লেডের ত্রুটির কারনে অন্ধ্র প্রদেশে একটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার ক্রাশ করে।
👉 ২ ই ফেব্রুয়ারি ২০০৭ এ Aero India তে বিমান বাহিনীর এয়ার শো প্রদর্শনের পূর্ববর্তী সময়ে রিহার্সেলের সময় ও একটি ক্রাশ করে। আর এতে স্কোয়াড্রন লিডার প্রিযে শর্মা নিহত হন এবং উইং কমান্ডার ও মারাত্মকভাবে আহত হন এবং তিনিও প্রায় ৪ বছর পর ২০১১ সালে মারা যান।
👉 ২৮ শে অক্টোবর ২০০৯, মিলিটারি প্যারেডের সময় ইকুয়েডর বিমানবাহিনীর একটি হাল দ্রুভ হেলিকপ্টার ক্রাশ করে আর এতে দুজন পাইলট ই বেশ আহত হয়।
ইনভেস্টিগেশন থেকে জানা যায় হাল দ্রুভ হেলিকপ্টারে থাকা যান্ত্রিক ত্রুটিই পাইলটের ক্রাশের কারন আর তাই পরবর্তীতে পুরো ফ্লিটের বাকি ৬ টি হেলিকপ্টারকেই গ্রাউন্ডেড করে দেওয়া হয়।
👉 ফেব্রুয়ারি ২০১০ সালে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর একটি দ্রুভ হেলিকপ্টার “বায়ু শক্তি” এয়ার শো এর পূর্বে রিহার্সেলের সময় ক্রাশ ল্যান্ডিং করতে বাধ্য হয়। তবে সৌভাগ্যবশত দুইজন পাইলট ই বেচে যায়।
👉 ১৪ ই ডিসেম্বর ২০১০ সালে জম্মু-কাশ্মীরে ও একটি ক্রাশ করে। আর এতে হেলিকপ্টারে থাকা ৯ জন কর্মকর্তাই আহত হন।
👉 এর ৮ দিন পরই ২২ শে ডিসেম্বর ২০১০ সালে লাদাখ এর লেহ শহরে আরেকটি হাল ধ্রুভ ক্রাশ করে।
👉 ২১ শে এপ্রিল ২০১১ তে উত্তর সিকিমে একটি হাল ধ্রুব হেলিকপ্টার ক্রাশ করে আর এতে ৪ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়।
👉 ১৯ শে অক্টোবর ২০১১ তে, ইন্ডিয়ান বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (BSF) এর একটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার উত্তর-পূর্ব ভারতে ক্রাশ করে। আর এতে সাথে সাথেই তিনজন ক্রু ই নিহত হয়।
👉 ১৫ ই জানুয়ারি ২০১২ সালে, বিএসএফ এর আরেকটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার টেস্ট ফ্লাইট এর সময় রানওয়েতে ক্রাশ করে। তবে এতে কোন নিহতের ঘটনা না ঘটলেও সাথে থাকা ৫ জন ক্রু-ই আহত হয়।
👉 ৫ ই এপ্রিল ২০১২ সালে, একটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার মাওবাদীদের দ্বারা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
👉 ১৩ ই মে ২০১৩ সালে, সিয়াচেন প্রদেশে একটি হাল ধ্রুভ হেলিকটার ক্রাশ করে। আর এতে পাইলট ও কো-পাইলট বেশ আহত হয়।
👉 ১৯ ই ডিসেম্বর ২০১৩ সালে, অস্ত্রসস্ত্রসহ ফ্লাইং অবস্থায় একটি হাল ধ্রুভ যান্ত্রিক ত্রুটির সম্মুখীন হয়, তবে এটি সৌভাগ্যবশত কর্ণাটাকাতে ইমারজেন্সি ল্যান্ডিং করতে সক্ষম হয়।
👉 ২২ শে ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তে, ইকুয়েডর বিমানবাহিনীর আরেকটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার চিম্বোরাজো প্রদেশে ক্রাশ করে। সৌভাগ্যবশত এতে পাইলট রক্ষা পেলেও হেলিকপ্টারে থাকা ৩ জন মিলিটারি কর্মকর্তাই নিহত হন।
👉 ২৫ শে জুলাই ২০১৪ সালে, ভারতীয় বায়ু সেনার (বিমান বাহিনীর) একটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে উত্তর প্রদেশে সিতাপুরের কাছে ক্রাশ করে। আর এতে হেলিকপ্টারে থাকা ৭ জন ই নিহত হয়।
👉 ১৩ ই জানুয়ারি ২০১৫ তে, ইকুয়েডর বিমানবাহিনীর একটি হাল ধ্রুভ হেলিকপ্টার ক্রাশ করে। আর এতে হেলিকপ্টারে থাকা দুইজন ক্রু আহত হয়।
১৬) ২৮ শে জানুয়ারি ২০১৫ সালে, ইকুয়েডর এয়ারফোর্সের আরেকটি হাল ধ্রুভ ক্রাশ করে। হেলিকপ্টারটির ৪ ক্রু মেম্বার্স ই এতে আহত হয়।
👉 ১১ ই ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর আরেকটি হালধ্রুভ হেলিকপ্টার জুম্মু-কাশ্মীরে ক্রাশ করে। এতে হেলিকপ্টারে থাকা দুজন ক্রু ই নিহত হয়।
এই হেলিকপ্টারটির যা ক্রাশ রেকর্ড আছ, তা অনেক দেশের বিমানবাহিনীর ইতিহাসে সব বিমান মিলিয়েও এতো ক্রাশ রেকর্ড নাই।
Post A Comment: